Thursday, March 31, 2016
Thursday, March 24, 2016
Wednesday, March 23, 2016
- 10:56:00 PM
- Kabbomoy
- স্মৃতিচারণ
স্মৃতিচারণ...........কাব্যময়....
যতদুর স্মৃতিচারণ করে মনে পড়ে,সময়টা ১৯৯৩ বা ১৯৯৪ সালের
কোন একদিন।
কিউট ফুঁটফুঁটে আদুঁরে একখান শিশু ছিলাম তখন আমি।আব্বা বাজারে যাওয়ার সময়ই লাফালাফি শুরু করে দিতাম।বাজারের ব্যাগ টেনে দরতাম আমি ও যাবো বলে কান্না জুড়ে দিতাম।একেই শিশু তার উপর আদুঁরে আব্বা মানা করেও হ্যাঁ সূচঁক সায় দিয়া হাসি মুখে রায় দিত-চল !
- 2:01:00 AM
- Kabbomoy
- মহান মানবের জীবনী
মহাত্মা লালন ও তার জীবনী
লালন বা লালন সাইঁ যে নামেই তাকে ডাকা হোকনা কেন তিনি সবসময়ই এক অতুলনীয় মানব সভ্যতার সম্পদ।তিনি বিশ্বের একমাত্র মানবতাবাধী ।তিনি মানব জনমের সর্ব ক্ষেত্র নিয়েই বলেগেছেন অমৃত অমূল্য বাণী।
যা যুগ যুগ ধরে টিকে আছে মানুষের মনে,মননে,চিন্তায়,কথায়,গানে,ধর্মে,পাঠে,
গবেষণায়,সবখানে।আর এই মহান মানবের বিশাল জীবনের একটুকরো আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র।......কাব্যময়
Tuesday, March 22, 2016
- 3:38:00 AM
- Kabbomoy
- মহান মানবের জীবনী
মহাত্মা লালন ও তার জীবনী
লালন (১৭৭৪ - ১৭ অক্টোবর ১৮৯০) ছিলেন বহুমুখী
প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি; যিনি ফকির লালন, লালন
সাঁই, লালন
শাহ, মহাত্মা
লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত।তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ
সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও
গায়ক ছিলেন।
লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন
হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার গানের মাধ্যমেই ঊনিশ শতকে বাউল গান বেশ জনপ্রিয়তা
অর্জন করে। তাকে ‘বাউল সম্রাট’ হিসেবেও
আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।
লালন ছিলেন একজন মানবতাবাদী। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ
সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন।
অসাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকেই তিনি তার গান রচনা করেছেন। তার গান ও দর্শন যুগে
যুগে প্রভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুলের মত বহু খ্যাতনামা
কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবিসহ
অসংখ্য মানুষকে। তার গানগুলো মূলত বাউল গান হলেও বাউল সম্প্রদায় ছাড়াও যুগে যুগে
বহু সঙ্গীতশিল্পীর কন্ঠে লালনের এই গানসমূহ উচ্চারিত হয়েছে। গান্ধীরও ২৫ বছর আগে, ভারত
উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, তাকে ‘মহাত্মা’ উপাধি
দেয়া হয়েছিল।
জীবনী
লালনের জীবন সম্পর্কে বিশদ কোন বিবরণ পাওয়া
যায় না। তার সবচেয়ে অবিকৃত তথ্যসূত্র তার নিজের রচিত অসংখ্য গান। কিন্তু লালনের
কোন গানে তার জীবন সম্পর্কে কোন তথ্য তিনি রেখে যাননি, তবে
কয়েকটি গানে তিনি নিজেকে "লালন ফকির" হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর
মৃত্যুর পনেরো দিন পর কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত হিতকরী পত্রিকার সম্পাদকীয় নিবন্ধে
বলা হয়, “ইহার
জীবনী লিখিবার কোন উপকরণ পাওয়া কঠিন। নিজে কিছু বলিতেন না। শিষ্যরা তাহার
নিষেধক্রমে বা অজ্ঞতাবশতঃ কিছুই বলিতে পারে না।"
লালনের জন্ম কোথায় তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
লালন নিজে কখনো তা প্রকাশ করেননি। কিছু সূত্রে পাওয়া যায় লালন ১৭৭৪ খ্রিষ্টাব্দে
তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশের) ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ড উপজেলা
উপজেলার হারিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। কোন কোন লালন গবেষক মনে করেন, লালন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাড়ারা গ্রামে জন্মেছিলেন।
এই মতের সাথেও অনেকে দ্বিমত পোষণ করেন। বাংলা ১৩৪৮ সালের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত
মাসিক মোহম্মদী পত্রিকায় এক প্রবন্ধে লালনের জন্ম যশোর জেলার ফুলবাড়ী গ্রামে বলে
উল্লেখ করা হয়।
হিতকরী পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিবন্ধে বলা
হয়েছে , লালন
তরুণ বয়সে একবার তীর্থভ্রমণে বের হয়ে পথিমধ্যে গুটিবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। তখন
তার সাথীরা তাকে মৃত ভেবে পরিত্যাগ করে যার যার গন্তব্যে চলে যায়। কালিগঙ্গা
নদীতে ভেসে আসা মুমূর্ষু লালনকে উদ্ধার করেন মলম শাহ। মলম শাহ ও তার স্ত্রী মতিজান
তাকে বাড়িতে নিয়ে সেবা-শুশ্রূষা দিয়ে সুস্থ করে তোলেন। এরপর লালন তার কাছে
দীক্ষিত হন এবং কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে স্ত্রী ও শিষ্যসহ বসবাস শুরু করেন।
গুটিবসন্ত রোগে একটি চোখ হারান লালন। ছেউড়িয়াতে তিনি দার্শনিক গায়ক সিরাজ
সাঁইয়ের সাক্ষাতে আসেন এবং তার দ্বারা প্রভাবিত হন।
এছাড়া লালন সংসারী ছিলেন বলে জানা যায়। তার
সামান্য কিছু জমি ও ঘরবাড়ি ছিল। লালন অশ্বারোহণে দক্ষ ছিলেন এবং বৃদ্ধ বয়সে
অশ্বারোহণের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে যেতেন।
ধর্ম বিশ্বাস
লালনের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে গবেষকদের মাঝে
যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে, যা তার জীবদ্দশায়ও বিদ্যমান ছিল। তার
মৃত্যুর পর প্রকাশিত প্রবাসী পত্রিকার মহাত্মা লালন নিবন্ধে প্রথম লালন জীবনী
রচয়িতা বসন্ত কুমার পাল বলেছেন- "সাঁইজি হিন্দু কি মুসলমান, এ
কথা আমিও স্থির বলিতে অক্ষম।" বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় লালনের
জীবদ্দশায় তাকে কোন ধরনের ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করতেও দেখা যায় নি। লালনের কোন
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। নিজ সাধনাবলে তিনি হিন্দুধর্ম এবং ইসলামধর্ম উভয়
শাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন। তার রচিত গানে এর পরিচয় পাওয়া যায়। প্রবাসী
পত্রিকার নিবন্ধে বলা হয়, লালনের সকল ধর্মের লোকের সাথেই সুসম্পর্ক
ছিল। মুসলমানদের সাথে তার সুসম্পর্কের কারনে অনেকে তাকে মুসলমান বলে মনে করত। আবার
বৈষ্ণবধর্মের আলোচনা করতে দেখে হিন্দুরা তাকে বৈষ্ণব মনে করতো। প্রকৃতপক্ষে লালন
ছিলেন মানবতাবাদী এবং তিনি ধর্ম, জাত, কূল, বর্ণ, লিঙ্গ
ইত্যাদি অনুসারে মানুষের ভেদাভেদ বিশ্বাস করতেন না।
বাংলা ১৩৪৮ সালের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত মাসিক
মোহম্মদী পত্রিকায় এক প্রবন্ধে লালনের জন্ম মুসলিম পরিবারে বলে উল্লেখ করা হয়।
আবার ভিন্ন তথ্যসূত্রে তার জন্ম হিন্দু পরিবারে বলে উল্লেখ করা হয়।
লালনের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে উপন্যাসিক সুনীল
গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন,
‘‘লালন
ধার্মিক ছিলেন,
কিন্তু
কোনোও বিশেষ ধর্মের রীতিনীতি পালনে আগ্রহী ছিলেন না। সব ধর্মের বন্ধন ছিন্ন করে
মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন জীবনে।’’
লালনের পরিচয় দিতে গিয়ে সুধীর চক্রবর্তী
লিখেছেন,
‘‘কাঙাল
হরিনাথ তাঁকে জানতেন, মীর মশাররফ চিনতেন, ঠাকুরদের
হাউসবোটে যাতায়াত ছিল, লেখক জলধর সেন বা অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়
তাঁকে সামনাসামনি দেখেছেন কতবার, গান শুনেছেন, তবু
জানতে পারেননি লালনের জাতপরিচয়, বংশধারা বা ধর্ম।”
একটি গানে লালনের প্রশ্নঃ
কিছু লালন অনুসারী যেমন মন্টু শাহের মতে, তিনি
হিন্দু বা মুসলমান কোনটিই ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন ওহেদানিয়াত নামক একটি নতুন
ধর্মীয় মতবাদের অনুসারী। ওহেদানিয়াতের মাঝে বৌদ্ধধর্ম এবং বৈষ্ণব ধর্মের সহজিয়া
মতবাদ, সুফিবাদ
সহ আরও অনেক ধর্মীয় মতবাদ বিদ্যমান। লালনের অনেক অনুসারী লালনের গানসমূহকে এই
আধ্যাত্মিক মতবাদের কালাম বলে অভিহিত করে থাকে।
লালনের আখড়া
লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার
ছেউড়িয়াতে একটি আখড়া তৈরি করেন, যেখানে তিনি তার শিষ্যদের নীতি ও
আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিতেন। তার শিষ্যরা তাকে “সাঞ’’ বলে
সম্বোধন করতেন। তিনি প্রতি শীতকালে আখড়ায় একটি ভান্ডারা (মহোৎসব) আয়োজন করতেন।
যেখানে সহস্রাধিক শিষ্য ও সম্প্রদায়ের লোক একত্রিত হতেন এবং সেখানে সংগীত ও
আলোচনা হত। চট্টগ্রাম, রঙপুর, যশোর এবং পশ্চিমে অনেক দূর
পর্যন্ত বাংলার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বহুসংখ্যক লোক লালন ফকিরের শিষ্য ছিলেন; শোনা
যায় তার শিষ্যের সংখ্যা প্রায় দশ হাজারের বেশি ছিল।
ঠাকুর পরিবারের সাথে সম্পর্ক
কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের অনেকের
সঙ্গে লালনের পরিচয় ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া যায়। বিরাহিমপুর পরগনায়
ঠাকুর পরিবারের জমিদারিতে ছিল তাঁর বসবাস এবং ঠাকুর-জমিদারদের প্রজা ছিলেন তিনি।
ঊনিশ শতকের শিক্ষিত সমাজে তার প্রচার ও গ্রহণযোগ্যতার পেছনে ঠাকুর পরিবার বড়
ভূমিকা রাখেন।
কিন্তু এই ঠাকুরদের সঙ্গে লালনের একবার
সংঘর্ষ ঘটে। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কুষ্টিয়ার কুমারখালির কাঙাল হরিনাথ মজুমদার
গ্রামবার্তা প্রকাশিকা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করতেন। এরই একটি সংখ্যায়
ঠাকুর-জমিদারদের প্রজাপীড়নের সংবাদ ও তথ্য প্রকাশের সূত্র ধরে উচ্চপদস্থ ইংরেজ
কর্মকর্তারা বিষয়টির তদন্তে প্রত্যক্ষ অনুসন্ধানে আসেন। এতে করে কাঙাল হরিনাথ
মজুমদারের ওপর বেজায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ঠাকুর-জমিদারেরা। তাঁকে শায়েস্তা করার
উদ্দেশ্যে লাঠিয়াল পাঠালে শিষ্যদের নিয়ে লালন সশস্ত্রভাবে জমিদারের লাঠিয়ালদের
মোকাবিলা করেন এবং লাঠিয়াল বাহিনী পালিয়ে যায়। এর পর থেকে কাঙাল হরিনাথকে
বিভিন্নভাবে রক্ষা করেছেন লালন।
লালনের জীবদ্দশায় তার একমাত্র স্কেচটি তৈরী
করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। লালনের মৃত্যুর বছরখানেক
আগে ৫ মে ১৮৮৯ সালে পদ্মায় তাঁর বোটে বসিয়ে তিনি এই পেন্সিল স্কেচটি করেন- যা
ভারতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। যদিও অনেকের দাবী এই স্কেচটিতে লালনের আসল চেহারা
ফুটে ওঠেনি।
মৃত্যু:
১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর লালন ১১৬ বছর বয়সে
কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর প্রায়
একমাস পূর্ব থেকে তিনি পেটের সমস্যা ও হাত পায়ের গ্রন্থির সমস্যায় ভুগছিলেন।
অসুস্থ অবস্থায় দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতেন না। এসময় তিনি মাছ খেতে চাইতেন।
মৃত্যুর দিন ভোর ৫টা পর্যন্ত তিনি গানবাজনা করেন এবং এক সময় তার শিষ্যদের কে
বলেনঃ “আমি
চলিলাম’’ এবং
এর কিছু সময় পরই তার মৃত্যু হয়। তার নির্দেশ বা ইচ্ছা না থাকায় তার মৃত্যুর পর
হিন্দু বা মুসলমান কোন ধরনের ধর্মীয় রীতি নীতিই পালন করা হয় নি। তারই উপদেশ
অনুসারে ছেউড়িয়ায় তার আখড়ার মধ্যে একটি ঘরের ভিতর তার সমাধি করা হয়।
আজও সারা বাংলাদেশ থেকে বাউলেরা অক্টোবর মাসে
ছেউড়িয়ায় মিলিত হয়ে লালনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তাঁর মৃত্যুর ১২
দিন পর তৎকালীন পাক্ষিক পত্রিকা মীর মশাররফ হোসেন সম্পাদিত হিতকরীতে প্রকাশিত একটি
রচনায় সর্বপ্রথম তাঁকে "মহাত্মা" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। রচনার
লেখকের নাম রাইচরণ।
লালন দর্শন
লালনের গানে মানুষ ও তার সমাজই ছিল মুখ্য।
লালন বিশ্বাস করতেন সকল মানুষের মাঝে বাস করে এক মনের মানুষ। তিনি সবকিছুর উর্ধ্বে
মানবতাবাদকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন।তার বহু গানে এই মনের মানুষের প্রসঙ্গ
উল্লেখিত হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করতেন মনের মানুষের কোন ধর্ম, জাত, বর্ণ, লিঙ্গ, কূল
নেই। মানুষের দৃশ্যমান শরীর এবং অদৃশ্য মনের মানুষ পরস্পর বিচ্ছিন্ন। সকল মানুষের
মনে ঈশ্বর বাস করেন।লালনের এই দর্শনকে কোন ধর্মীয় আদর্শের অন্তর্গত করা
যায় না।লালন, মানব আত্মাকে বিবেচনা করেছেন রহস্যময়, অজানা
এবং অস্পৃশ্য এক সত্তা রূপে। খাঁচার ভিতর অচিন পাখি গানে তিনি মনের অভ্যন্তরের
সত্তাকে তুলনা করেছেন এমন এক পাখির সাথে, যা সহজেই খাঁচা রূপী দেহের মাঝে
আসা যাওয়া করে কিন্তু তবুও একে বন্দি করে রাখা যায় না।
লালনের সময়কালে যাবতীয় নিপীড়ন, মানুষের
প্রতিবাদহীনতা,
ধর্মীয়
গোঁড়ামি-কুসংস্কার, লোভ, আত্মকেন্দ্রিকতা সেদিনের সমাজ ও
সমাজ বিকাশের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।সমাজের নানান কুসংস্কারকে তিনি
তার গানের মাধ্যমে করেছেন প্রশ্নবিদ্ধ।আর সে কারণেই লালনের সেই সংগ্রামে
বহু শিষ্ট ভূস্বামী, ঐতিহাসিক, সম্পাদক, বুদ্ধিজীবী, লেখক
এমনকি গ্রামের নিরক্ষর সাধারণ মানুষও আকৃষ্ট হয়েছিলেন ।
আধ্যাত্মিক ভাবধারায় তিনি প্রায় দুই হাজার
গান রচনা করেছিলেন। তার সহজ-সরল শব্দময় এই গানে মানবজীবনের রহস্য, মানবতা
ও অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে।লালনের বেশ কিছু রচনা থেকে ইঙ্গিত
পাওয়া যায় যে তিনি ধর্ম-গোত্র-বর্ণ-সম্প্রদায় সম্পর্কে অতীব সংবেদনশীল ছিলেন।
ব্রিটিশ আমলে যখন হিন্দু ও মুসলিম মধ্যে জাতিগত বিভেদ-সংঘাত বাড়ছিল তখন লালন
ছিলেন এর বিরূদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর।তিনি মানুষে-মানুষে কোনও ভেদাভেদে বিশ্বাস করতেন
না। মানবতাবাদী লালন দর্শনের মূল কথা হচ্ছে মানুষ। আর এই দর্শন প্রচারের জন্য তিনি
শিল্পকে বেছে নিয়েছিলেন। লালনকে অনেকে পরিচয় করিয়ে দেবার চেষ্টা করেছেন
সাম্প্রদায়িক পরিচয় দিয়ে। কেউ তাকে হিন্দু, কেউ মুসলমান হিসেবে পরিচয়
করাবার চেষ্টা করেছেন। লালনের প্রতিটি গানে তিনি নিজেকে ফকির ( আরবি
"সাধু") হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
লালন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেনঃ
“লালন ফকির নামে একজন বাউল সাধক
হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, জৈন
ধর্মের সমন্বয় করে কী যেন একটা বলতে চেয়েছেন - আমাদের সবারই সেদিকে মনোযোগ
দেওয়া উচিৎ।”
যদিও তিনি একবার লালন 'ফকির' বলেছেন, এরপরই
তাকে আবার 'বাউল' বলেছেন, যেখানে
বাউল এবং ফকিরের অর্থ পারস্পরিক সংঘর্ষপ্রবণ।
বাউল দর্শন
বাউল একটি বিশেষ লোকাচার ও ধর্মমত। লালনকে
বাউল মত এবং গানের একজন অগ্রদূত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।বাউল মত সতেরো শতকে জন্ম
নিলেও লালনের গানের জন্য ঊনিশ শতকে বাউল গান জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বাউল গান যেমন
মানুষের জীবন দর্শন সম্পৃক্ত বিশেষ সুর সমৃদ্ধ। বাউলরা সাদামাটা জীবনযাপন করেন এবং একতারা
বাজিয়ে গান গেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোই তাদের অভ্যাস।বাংলা লোকসাহিত্যের
একটি বিশেষ অংশ। ২০০৫ সালে ইউনেস্কো বাউল গানকে বিশ্বের মৌখিক এবং দৃশ্যমান
ঐতিহ্যসমূহের মাঝে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে।
বাউলেরা উদার ও অসাম্প্রদায়িক ধর্মসাধক।তারা
মানবতার বাণী প্রচার করেন। বাউল মতবাদের মাঝে বৈষ্ণবধর্ম এবং সূফীবাদের প্রভাব
লক্ষ করা যায়। বাউলরা সবচেয়ে গুরুত্ব দেয় আত্মাকে।তাদের মতে আত্মাকে জানলেই
পরমাত্মা বা সৃষ্টিকর্তাকে জানা যায়।আত্মা দেহে বাস করে তাই তারা দেহকে পবিত্র
জ্ঞান করেন। সাধারণত অশিক্ষিত হলেও বাউলরা জীবনদর্শন সম্পর্কে অনেক গভীর কথা
বলেছেন।বাউলরা তাদের দর্শন ও মতামত বাউল গানের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করে থাকেন।
বিশ্ব সাহিত্যে প্রভাব
লালনের গান ও দর্শনের দ্বারা অনেক বিশ্বখ্যাত
কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক
প্রভাবিত হয়েছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ লালনের মৃত্যুর ২ বছর পর তার আখড়া
বাড়িতে যান এবং লালনের দর্শনে প্রভাবিত হয়ে ১৫০টি গান রচনা করেন।তার বিভিন্ন
বক্তৃতা ও রচনায় তিনি লালনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন।লালনের মানবতাবাদী দর্শনে
প্রভাবিত হয়েছেন সাম্যবাদী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আমেরিকান কবি এলেন গিন্সবার্গ
লালনের দর্শনে প্রভাবিত হন এবং তার রচনাবলীতেও লালনের রচনাশৈলীর অনুকরণ দেখা যায়।
তিনি After
Lalon নামে একটি কবিতাও রচনা করেন।
লালনের সংগীত ও ধর্ম-দর্শন নিয়ে দেশ-বিদেশে
নানা গবেষণা হয়েছে ও হচ্ছে। ১৯৬৩ ছেউড়িয়ায় আখড়া বাড়ি ঘিরে লালন লোকসাহিত্য
কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্রের বিলুপ্তি ঘটিয়ে ১৯৭৮
সালে শিল্পকলা একাডেমীর অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয় লালন একাডেমী।
তার মৃত্যু দিবসে ছেউড়িয়ার আখড়ায় স্মরণ
উৎসব হয়। দেশ-বিদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অসংখ্য মানুষ লালন স্মরণোৎসব ও দোল
পূর্ণিমায় এই আধ্যাত্মিক সাধকের দর্শন অনুস্মরণ করতে প্রতি বছর এখানে এসে থাকেন।
২০১০ সাল থেকে এখানে পাঁচ দিনব্যাপী উৎসব হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানটি "লালন
উৎসব" হিসেবে পরিচিত। ২০১২ সালে এখানে ১২২তম লালন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
জনপ্রিয় মাধ্যমে লালন
উপন্যাস
রণজিৎ কুমার লালন সম্পর্কে সেনবাউল রাজারাম, নামে
একটি উপন্যাস রচনা করেন। পরেশ ভট্টাচার্য রচনা করেন বাউল রাজার প্রেম নামে একটি
উপন্যাস। ভারতের বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লালনের জীবনী নিয়ে
রচনা করেন মনের মানুষ উপন্যাস। এই উপন্যাসে কোন নির্ভরযোগ্য সূত্র ব্যতিরেকেই
লালনকে হিন্দু কায়স্থ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছ, নাম দেয়া
হয়েছে লালন চন্দ্র কর।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত উপন্যাস ‘গোরা’ শুরু
হয়েছে লালনের গান ‘‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়’’ দিয়ে।
১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে সুনির্মল বসু লালন ফকিরের
ভিটে নামে একটি ছোট গল্প রচনা করেন। শওকত ওসমান ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে রচনা করেন দুই
মুসাফির নামের একটি ছোটগল্প।
চলচ্চিত্র
লালনকে নিয়ে কয়েকটি চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র
নির্মিত হয়েছে। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ হাসান ইমাম পরিচালনা করেন লালন ফকির
চলচ্চিত্রটি। শক্তি চট্টোপাধ্যায় ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে একই নামে একটি চলচ্চিত্র
নির্মাণ করেন। ম. হামিদ ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে পরিচালনা করেন তথ্যচিত্র দ্যাখে কয়জনা
যা বাংলাদেশে টেলিভিশনে প্রদর্শিত হয়। তানভীর মোকাম্মেল ১৯৯৬ সালে পরিচালনা করেন
তথ্যচিত্র অচিন পাখি।২০০৪ সালে তানভির মোকাম্মেলের পরিচালনায় লালন নামে একটি
চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। এছাড়া ২০১০ এ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে
গৌতম ঘোষ মনের মানুষ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করে যা ২০১০ খ্রিস্টাব্দে ৪১তম
ভারতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্রের পুরষ্কার লাভ করে। উল্লেখ্য যে এই
চলচ্চিত্রে লালনকে কোন উল্লেখযোগ্য সূত্র ছাড়াই হিন্দু হিসাবে উপস্থাপন করা
হয়েছে। এই চলচ্চিত্রটি অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হয়।
লালনের কবিতা
মার্কিন কবি এলেন গিন্সবার্গ লালনের দর্শনে
প্রভাবিত হন এবং তার রচনাবলীতেও লালনের রচনাশৈলীর অনুকরণ দেখা যায়। তিনি After Lalon নামে
একটি কবিতাও রচনা করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন তিনি লালনের আছে যার মনের মানুষ সে
মনে এই গানে উল্লেখিত মনের মানুষ কে তা আবিষ্কার করতে পেরেছেন।এ প্রসঙ্গে তিনি
একটি কবিতাও রচনা করেন। যার কথা ছিল আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে, তাই
হেরি তায় সকলখানে.
লালনের গান
লালনের গান লালগীতি বা লালন সংগীত হিসেবে পরিচিত।লালন তার সমকালীন
সমাজের নানান কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা, সামাজিক বিভেদ ইত্যাদির বিরুদ্ধে তার
রচিত গানে তিনি একই সাথে প্রশ্ন ও উত্তর করার একটি বিশেষ শৈলী অনুসরণ
করেছেন। এছাড়া তার অনেক গানে তিনি রূপকের আড়ালেও তার নানান দর্শন উপস্থাপন
করেছেন।
গানের জনপ্রিয়তা
সমগ্র বিশ্বে, বিশেষ করে বাংলাদেশসহ সমগ্র ভারতীয়
উপমহাদেশে লালনের গান বেশ জনপ্রিয়। শ্রোতার পছন্দ অনুসারে বিবিসি বাংলার করা
সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় লালনের খাঁচার ভিতর
অচিন পাখি কেমনে আসে যায় গানটির অবস্থান ১৪তম। আত্মতত্ত্ব, দেহতত্ত্ব, গুরু বা
মুর্শিদতত্ত্ব,
প্রেম-ভক্তিতত্ত্ব, সাধনতত্ত্ব, মানুষ-পরমতত্ত্ব, আল্লাহ্-নবীতত্ত্ব, কৃষ্ণ-গৌরতত্ত্ব
এবং আরও বিভিন্ন বিষয়ে লালনের গান রয়েছে।
|
|
ফরিদা পারভিন উপমহাদেশের সেরা লালন সঙ্গীত
শিল্পীদের একজন। আনুশেহ আনাদিল, অরূপ রাহী, ক্লোজআপ
ওয়ান তারকা মশিউর রহমান রিংকু জনপ্রিয় লালন সঙ্গীত শিল্পী। লালনের মাজারে অসংখ্য
বাউল শিল্পী একতারা বাজিয়ে লালন গানের চর্চা করে থাকেন।
গানের সংগ্রহ
লালনের গান "লালনগীতি" বা কখনও
"লালন সংগীত" হিসেবে প্রসিদ্ধ। লালন মুখে মুখে গান রচনা করতেন এবং সুর
করে পরিবেশন করতেন। এ ভাবেই তার বিশাল গান রচনার ভাণ্ডার গড়ে উঠে। তিনি সহস্রাধিক
গান রচনা করেছেন বলে ধারণা করা হয়।তবে তিনি নিজে তা লিপিবদ্ধ করেন নি। তার
শিষ্যরা গান মনে রাখতো আর পরবর্তীতে লিপিকার তা লিপিবদ্ধ করতেন। আর এতে করে তার
অনেক গানই লিপিবদ্ধ করা হয়নি বলে ধারনা করা হয়।
বাউলদের জন্য তিনি যেসব গান রচনা করেন, তা কালে-কালে এত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে মানুষ
এর মুখে মুখে তা পুরো বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লালনের গানে
প্রভাবিত হয়ে, প্রবাসী পত্রিকার ‘হারামণি’ বিভাগে
লালনের কুড়িটি গান প্রকাশ করেন।মুহম্মদ মনসুরউদ্দিন একাই তিন শতাধিক লালন গীতি
সংগ্রহ করেছেন যা তাঁর হারামণি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এ ছাড়াও তাঁর অন্য দুটি
গ্রন্থের শিরোনাম যথাক্রমে ‘লালন
ফকিরের গান’ এবং ‘লালন গীতিকা’ যাতে
বহু লালন গীতি সংকলিত হয়েছে। জ্যোতিরিন্দ্রিনাথ ঠাকুর সম্পাদিত ‘বীণা’, ‘বাদিনী’ পত্রিকায় ৭ম সংখ্যা ২ ভাগ (মাঘ) ১৩০৫-এ ‘পারমার্থিক গান’ শিরোনামে লালনের ‘ক্ষম অপরাধ ও দীননাথ’ গানটি স্বরলিপিসহ প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকায়
৮ম সংখ্যা ২ ভাগ (ফাগুন) ১৩০৫-এ প্রকাশিত আরেকটি লালনগীতি ‘কথা কয় কাছে দেখা যায় না’ দুটি গানেরই স্বরলিপি করেন ইন্দিরা দেবী।
প্রেমদাস বৈরাগী গীত এ লালন গীতি সংগ্রহ করেছিলেন মুহাম্মাদ মনসুরউদ্দীন এবং তা
মাসিক প্রবাসী পত্রিকার হারামণি অংশে প্রকাশিত হয়েছিল।
লালনের গানের কথা, সুর ও দর্শনকে বিভিন্ন গবেষক বিভিন্নভাবে
উল্লেখ করেছেন। লালন গবেষক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, অনেক
গান যাতে লালন বলে কথাটির উল্লেখ আছে তার সবই প্রকৃতপক্ষে লালনের নয়।মন্টু শাহ
নামের একজন বাউল, তিন
খণ্ডের একটি বই প্রকাশ করেছেন যাতে তিনি মনিরুদ্দিন শাহ নামক লালনের সরাসরি
শিষ্যের সংগৃহীত লালন সংগীতগুলো প্রকাশ করেছেন।
বিতর্ক ও সমালোচনা
সাম্প্রদায়িক ধর্মবাদীরা লালনের
অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারনে তার সর্বাধিক সমালোচনা করে থাকে। লালন তার
জীবদ্দশায় নিজের ধর্ম পরিচয় কারও কাছে প্রকাশ করেননি। তার ধর্ম বিশ্বাস আজও একটি
বিতর্কিত বিষয়।লালনের অসাম্প্রদায়িকতা, লিঙ্গ
বৈষম্যের বিরোধিতা ইত্যাদির কারনে তাকে তার জীবদ্দশায় ধর্মান্ধ এবং মৌলবাদী
হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের ঘৃণা, বঞ্চনার
এবং আক্রমণের শিকার হতে হয়। এছাড়া তার ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী দর্শন এবং ঈশ্বর, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ে তার উত্থাপিত নানান
প্রশ্নের কারনে
অনেক ধর্মবাদী তাকে নাস্তিক হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন।
লালন-গীতিকা/অকুল পাড় দেখে মোদের লাগল রে ভয়
লালন-গীতিকা/অখন্ড মন্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচর
লালন-গীতিকা/অজান খবর না রাখিলে কিসের ফকিরি
লালন-গীতিকা/অনাদির আদি শ্রীকৃষ্ণনিধি
লালন-গীতিকা/অনুরাগ বিনে কি সাধন হয়
লালন-গীতিকা/অনেক ভাগ্যের ফলে সে চাঁদ কেউ দেখিতে পায়
লালন-গীতিকা/অন্তরে যার সদায় সহজ রূপ জাগে
লালন-গীতিকা/অন্তিম কালের কালে ও কি হয় না জানি
লালন-গীতিকা/অপারের কাণ্ডার নবিজী আমার
লালন-গীতিকা/অবোধ মন তোরে আর কী বলি
লালন-গীতিকা/অমর ভেবে সার
লালন-গীতিকা/অমাবস্যার দিনে চন্দ্র থাকেন যেয়ে কোন শহরে
লালন-গীতিকা/অমৃত বারি, সে
বারি অনুরাগ নইলে কি যাবে ধরা
লালন-গীতিকা/অমৃত মেঘের বারি
লালন-গীতিকা/আগে জান না ও মনুরায়
লালন-গীতিকা/আছে আদি মক্কা এই মানব দেহে
লালন-গীতিকা/আছে ভাবের তালা যেই ঘরে
লালন-গীতিকা/আছে যার মনের মানুষ মনে তোলা
লালন-গীতিকা/আছেন কোথায় স্বর্গপুরে
লালন-গীতিকা/আজ রোগ বাড়ালি কুপথ্য করে
লালন-গীতিকা/আজগবি বৈরাগ্য লীলা দেখতে পাই
লালন-গীতিকা/আজব
আয়না-মহল মণি গভীরে
লালন-গীতিকা/আজব রং ফকিরি সাধা সোহাগিনী সাঁই
লালন-গীতিকা/আঠার মোকামে একটি রূপের বাতি জ্বলছে সদাই
লালন-গীতিকা/আপন ঘরের খবর লে না
লালন-গীতিকা/আপন মনের বাঘে যারে খায়
লালন-গীতিকা/আপন সুরতে আদম গঠলেন দয়াময়
লালন-গীতিকা/আপনাকে আপনে যে জন জানে
লালন-গীতিকা/আপনার আপন খবর নাই
লালন-গীতিকা/আপনার আপনি ফানা হলে
লালন-গীতিকা/আপনারে আপন চিনেছে যে জন
লালন-গীতিকা/আপনারে আপনি চিনি নে
লালন-গীতিকা/আপনারে আপনি চেনা যদি যায়
লালন-গীতিকা/আপনারে আপনি রে মন, না জান ঠিকানা
লালন-গীতিকা/আবহায়াতের নদী কোনখানে
লালন-গীতিকা/আমার আপন খবর আপনার হয় না
লালন-গীতিকা/আমার ঘর খানায় কে বিরাজ করে
লালন-গীতিকা/আমার ঘরের চাবি পরেরই হাতে
লালন-গীতিকা/আমার ঠাহর নাই গো মন-বেপারী
লালন-গীতিকা/আমার দিন কি যাবে এই হালে
লালন-গীতিকা/আমার দেহ-নদীর বেগ থাকে না
লালন-গীতিকা/আমার মন বেবাগী ঘোড়া
লালন-গীতিকা/আমার মন যারে চায়, তারে কি কোথায় পাই
লালন-গীতিকা/আমার মন রে, তুই
হইলি কেন পেরেসান
লালন-গীতিকা/আমার মন রে, দিন
থাকিতে চিনে
লালন-গীতিকা/আমার মন-চোরারে কোথা পাই
লালন-গীতিকা/আমার মনে রে বোঝাই কিসে
লালন-গীতিকা/আমার মনের বাসনা পূর্ণ হল না
লালন-গীতিকা/আমার হয় না রে সে মনের মত মন
লালন-গীতিকা/আমারে কি রাখবেন গুরু চরণদাসী
লালন-গীতিকা/আমি অপার হয়ে বসে আছি
লালন-গীতিকা/আমি আর কতদিন জানি এই অবলার প্রাণী
লালন-গীতিকা/আমি ঐ চরণে দাসের যোগ্য নই
লালন-গীতিকা/আমি কি তাই জানলে সাধন সিদ্ধি হয়
লালন-গীতিকা/আমি কি দোষ দিব কারে রে
লালন-গীতিকা/আমি কোন সাধনে তারে পাই
লালন-গীতিকা/আমি চরণ পাব কোনদিনে
লালন-গীতিকা/আমি জন্ম-দুঃখী কপাল-পোড়া
লালন-গীতিকা/আমি বলি তোরে মন, গুরুর চরণ কর রে ভজন
লালন-গীতিকা/আয় কে যাবি ওপারে
লালন-গীতিকা/আয় দেখে যা নতুন ভাব এনেছে গোরা
লালন-গীতিকা/আর আমারে মারিসনে মা
লালন-গীতিকা/আর কি এমন জনম, বসবো সাধুর মেলে
লালন-গীতিকা/আর কি বসবো এমন সাধ বাজারে
লালন-গীতিকা/আল্লা বল মন রে পাখী
লালন-গীতিকা/আল্লাহ কে বোঝে তোমার অপার লীলে
লালন-গীতিকা/আশা পূর্ণ হলো না
লালন-গীতিকা/আহাদে আহাম্মদ এসে
লালন-গীতিকা/ইবলিসের সেজদার ঠাঁই ছেড়ে
লালন-গীতিকা/এ গোকুলে শ্যামের প্রেমে
লালন-গীতিকা/এ দেশেতে এই সুখ হল
লালন-গীতিকা/এ বড় আজব কুদরতি
লালন-গীতিকা/এই মানুষে সেই মানুষ আছে
লালন-গীতিকা/এক ফুলে চার রঙ ধরেছে
লালন-গীতিকা/এক ফুলের মর্ম জানতে হয়
লালন-গীতিকা/একবার ভবের কেনারে লাগাও তরী
লালন-গীতিকা/এখন আর ভাবলে কি হবে
লালন-গীতিকা/এনে মহাজনের ধন বিনাশ করলি ক্ষ্যাপা
লালন-গীতিকা/এবার কে তোর মালেক, চিনলিনে তারে
লালন-গীতিকা/এমন দিন কি হবে রে আর
লালন-গীতিকা/এমন মানব জনম আর কি হবে
লালন-গীতিকা/এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে
লালন-গীতিকা/এমন সৌভাগ্য আমার কবে হবে
লালন-গীতিকা/এলাহি আলমিন গো আল্লাহ বাদশাহ আলমপনা তুমি
লালন-গীতিকা/এস হে প্রভু নিরঞ্জন
লালন-গীতিকা/এসব দেখি কানার হাট বাজার
লালন-গীতিকা/এসো দয়াল আমায় পার কর ভবের ঘাটে
লালন-গীতিকা/এসো হে অপারের কাণ্ডারি
লালন-গীতিকা/ঐ কালার কথা কেন বলো আজ আমায়
লালন-গীতিকা/ঐ রূপ তিলে তিলে জপ মন জুতে
লালন-গীতিকা/ও আমার মন যারে চাই
লালন-গীতিকা/ও জীবের ধান্ধা কেন যায় না
লালন-গীতিকা/ও তার ঠিকের ঘরে ভুল পড়েছে মন
লালন-গীতিকা/ও মন, কে
তোমার যাবে সাথে
লালন-গীতিকা/ও মন, দেখে
শুনে ঘোর গেল না
লালন-গীতিকা/ও সে ফুলের মর্ম জানতে হয়
লালন-গীতিকা/ওরে মন আমার গেল জানা
লালন-গীতিকা/কই হল মোর মাছ ধরা
লালন-গীতিকা/কয় দমেতে বাজে ঘড়ি করবে ঠিকানা
লালন-গীতিকা/করি কেমনে সহজ শুদ্ধ প্রেম সাধন
লালন-গীতিকা/করি মানা কাম ছাড়েনা মদনে
লালন-গীতিকা/কার ভাবে এ ভাব হারে জীবন কানাই
লালন-গীতিকা/কারে দিব দোষ
লালন-গীতিকা/কারে বলবো আমার মনের বেদনা
লালন-গীতিকা/কারে সুধাই আজ সে কথা
লালন-গীতিকা/কাল
কাটালি কালের বশে
লালন-গীতিকা/কাশী কি মক্কায় যাবি রে মন, চল রে যাই
লালন-গীতিকা/কি আইন আনিলেন নবি সকলের শেষে
লালন-গীতিকা/কি আজব কলে রসিক বানিয়েছে কোঠা
লালন-গীতিকা/কি করি কোন পথে যাই মনে কিছু
লালন-গীতিকা/কি করি ভেবে মরি
লালন-গীতিকা/কি শোভা করেছেন সাঁই রঙমহলে
লালন-গীতিকা/কি সন্ধানে যাই সেখানে
লালন-গীতিকা/কিবা রূপের ঝলক দিচ্ছে দ্বিদলে
লালন-গীতিকা/কিবা শোভা দ্বিদলের ‘পরে
লালন-গীতিকা/কিসে আর বোঝাই মন তোরে
লালন-গীতিকা/কূলের বউ ছিলাম বাড়ি
লালন-গীতিকা/কূলের বৌ হয়ে মন আর কতদিন
লালন-গীতিকা/কে তোমারে এ বেশ ভূষণ
লালন-গীতিকা/কে তোর মালেক চিনলি না রে
লালন-গীতিকা/কে বানাইলো এমন রঙমহল খানা
লালন-গীতিকা/কে বোঝে মাওলার আলেকবাজি
লালন-গীতিকা/কেন সময় বুঝে বাঁধাল বাঁধলে না
লালন-গীতিকা/কেনে ডুবলি না মন গুরুর চরণে
লালন-গীতিকা/কোথা আছে রে সেই দীন দরদী সাঁই
লালন-গীতিকা/কোথায় রইলে হে দয়াল কাণ্ডারী
লালন-গীতিকা/কোন কলে নানাবিধ আওয়াজ উদয়
লালন-গীতিকা/কোন কুলে যাবি মনুরায়
লালন-গীতিকা/কোন দেশে যাবি মন, চল দেখি যাই
লালন-গীতিকা/কোন বা দেশের মানুষ গো, ও বলো
লালন-গীতিকা/কোন রসে কোন রতির খেলা
লালন-গীতিকা/কোন রাগে সে মানুষ আছে মহারসের ধনী
লালন-গীতিকা/ক্ষম ক্ষম অপরাধ
লালন-গীতিকা/ক্ষ্যাপা তুই না জেনে তোর আপন খবর যাবি কোথায়
লালন-গীতিকা/খাঁচার ভিতর অচিন পাখী কেমনে আসে যায়
লালন-গীতিকা/খাকে গড়লো পিঞ্জিরে
লালন-গীতিকা/খালি ভাঁড় থাকবে রে পড়ে
লালন-গীতিকা/খুঁজে ধন পাই কি মতে
লালন-গীতিকা/খুল নে কেনে সে ধন
লালন-গীতিকা/গুণে পড়ে সারলি দফা
লালন-গীতিকা/গুরু গো সাঁই, হক
নাম বল রসনা
লালন-গীতিকা/গুরু দোহাই তোমার, মনকে আমার লও গো সুপথে
লালন-গীতিকা/গুরু বল নৌকা খোল
লালন-গীতিকা/গুরু বলে ধর পাড়ি মন হুঁস থেকে
লালন-গীতিকা/গুরু বিনে কি ধন আছে
লালন-গীতিকা/গুরু যার কাণ্ডারী ভবে
লালন-গীতিকা/গুরু রূপের পুলক ঝলক দিচ্ছে যার অন্তরে
লালন-গীতিকা/গুরু, সু-ভাব
দেও আমার মনে
লালন-গীতিকা/গুরু-বস্তু চিনলে না
লালন-গীতিকা/গুরু-শিষ্য
এক আত্মা যদি হওয়া যায়
লালন-গীতিকা/গুরুপদে ডুবে থাক রে আমার মন
লালন-গীতিকা/গুরুপদে নিষ্ঠা মন যার হবে
লালন-গীতিকা/গুরুপদে মতি আমার হল কই
লালন-গীতিকা/গুরুর চরণ অমূল্য ধন
লালন-গীতিকা/গুরুর দয়া যারে হয় সেই জানে
লালন-গীতিকা/গুরুর নাম লইয়া তুই বস না ধ্যানে
লালন-গীতিকা/গুরুর ভাব রাখা হইল রে আমার বিষয় দায়
লালন-গীতিকা/গেড়ে গাঙ্গেরে ক্ষ্যাপা
লালন-গীতিকা/গোয়াল ভরা পুষনে ছেলে
লালন-গীতিকা/ঘরের মধ্যে ঘর বেঁধেছেন
লালন-গীতিকা/চল দেখি মন কোন দেশে যাবি
লালন-গীতিকা/চলো যাই আনন্দের বাজারে
লালন-গীতিকা/চাঁদ ধরা ফাঁদ জান না রে মন
লালন-গীতিকা/চাঁদ বদনে বল গোসাঁই।
লালন-গীতিকা/চাঁদে চাঁদে চন্দ্রগ্রহণ হয়
লালন-গীতিকা/চাতক বাঁচে কেমনে
লালন-গীতিকা/চারটি চন্দ্র ভাবের ভুবনে
লালন-গীতিকা/চিরকাল জল ছেঁচে আমার জল
লালন-গীতিকা/চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি
লালন-গীতিকা/চেয়ে দেখনা রে মন দিব্যনজরে
লালন-গীতিকা/জগৎ মুক্তিতে ভোলালেন সাঁই
লালন-গীতিকা/জাত গেল জাত গেল বলে
লালন-গীতিকা/জান গে সেই রাগের করণ
লালন-গীতিকা/জান না রে মন
লালন-গীতিকা/জানবো এই পাপী হতে
লালন-গীতিকা/জানা
চাই অমাবস্যায় চাঁদ থাকে কোথায়
লালন-গীতিকা/ঠিকের ঘরে ভুল পড়েছে মন
লালন-গীতিকা/তুমি কার আজ কেবা তোমার এই সংসারে
লালন-গীতিকা/তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে
লালন-গীতিকা/দয়াল নিতাই কারো ফেলে যাবে না
লালন-গীতিকা/দাঁড়া কানাই একবার দেখি
লালন-গীতিকা/দায়ে ঠেকে বলছ রে মন আল্লাগনি
লালন-গীতিকা/দিন দুনিয়ার অচিন মানুষ আছে একজনা
লালন-গীতিকা/দিনে দিনে হল আমার দিন আখেরি
লালন-গীতিকা/দিনে দিনে হলো আমার দিন আখেরি
লালন-গীতিকা/দিব্যজ্ঞানে দেখ রে মনুরায়
লালন-গীতিকা/দিল দরিয়ার মাঝে দেখলাম আজব কারখানা
লালন-গীতিকা/দিল দরিয়ার মাঝে রে মন
লালন-গীতিকা/দেখ না মন, ঝকমারি
এই দুনিয়াদারী
লালন-গীতিকা/দেখ রে দিন কোথা হইতে হয়
লালন-গীতিকা/দেখিলাম এ সংসার ভোজবাজি প্রকার
লালন-গীতিকা/দেল ছুঁড়ে দেখনা মনা
লালন-গীতিকা/দেহের
খবর বলি শোন রে মন
লালন-গীতিকা/দ্বীনের ডঙ্কা
লালন-গীতিকা/ধড়ে কোথায় মক্কা-মদিনা
লালন-গীতিকা/ধন্য আশেকিজনা এ দীন দুনিয়ায়
লালন-গীতিকা/ধন্য ধন্য বলি তারে
লালন-গীতিকা/ধন্য মায়ের নিমাই ছেলে
লালন-গীতিকা/ধর চোর হাওয়ার ঘরে ফান্দ পেতে
লালন-গীতিকা/নবি না চিনলে সে কি খোদার ভেদ পায়
পিডিএফটি পড়তে ক্লিক করুন এখানে......See PDF BOOK
Subscribe to:
Posts (Atom)